Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
শহীদ কমরেড কম্পরাম সিংহ স্মৃতি কমপ্লেক্স
কিভাবে যাওয়া যায়
ঢাকা থেকে সড়ক পথে বিলাসবহুল বাসযোগে সরাসরি বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় খুব সহজেই পৌছানো যায় । সড়ক পথে ঢাকা থেকে বালিয়াডাঙ্গীর দুরত্ব প্রায় ৪৫০ কি.মি। বিমানপথে সৈয়দপুরে পৌছে সড়ক পথে এবং রেলযোগে ঠাকুরগাও রোড রেলস্টেশন পৌছে সড়কপথে বালিয়াডাঙ্গী নির্বিঘ্নে পৌছানো যায়। ঢাকা থেকে সরাসরি এশিয়ান হাইওয়ে বালিয়াডাঙ্গী পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় অধিকাংশ মূল সড়ক পাকা হলেও আনাচে কানাচে কাচা সড়ক পরিলক্ষিত হয়। বেলে মাটি হওয়ায় বর্ষার মৌসুমেও কাচা সড়ক চলাচলের উপযোগী থাকে। প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী থেকে লাহিড়ী হাট আসতে হবে এরপর লাহিড়ী ধান হাঁটি সড়কের পশ্চিমে বামুনিয়া গ্রাম হয়ে উত্তরে চৌরঙ্গী বাজার , এই বাজার থেকে ১ (এক) কিলোমিটার পরেই শালডাঙ্গা গ্রামে শহীদ কমরেড কম্পরাম সিংহ স্মৃতি কমপ্লেক্স অবস্থিত ।
বিস্তারিত
শহীদ কমরেড কম্পরাম সিংহ (১৮৮৭ – ১৯৫০) পরিচিতি: শহীদ কমরেড কম্পরাম সিংহ ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন, তেভাগা আন্দোলন ও সাম্যবাদী কৃষক আন্দোলনের নেতা এবং একজন শহীদ বিপ্লবী। তিনি ১৮৮৭ সালে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাড়িয়া ইউনিয়নের উত্তর পাড়িয়া শালডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহীর খাপড়া ওয়ার্ড় গণহত্যায় আরও ছয়জন রাজবন্দীর সঙ্গে শহীদ হন। মৃ্ত্যুর পূর্বে তিনি তাঁর জীবনের সমস্ত সঞ্চয় কমিউনিস্ট পার্টিকে দান করে যান। পারিবারিক জীবন: কমরেড কম্পরাম সিংহের পিতার নাম রসিকলাল সিংহ । তাঁর স্ত্রীর নাম পয়ানশ্বরী সিংহ । কম্পরাম সিংহ এর দুই ভাই ছিল, সন্তরাম সিংহ ও সেবক দাস সিংহ। কম্পরাম সিংহের এক ছেলে এবং এক মেয়ে ছিল, ছেলের নাম লালমোহন সিংহ এবং মেয়ের নাম পরবাসী বালা। লালমোহন সিং তাঁর পিতার জীবদ্দশাতেই দুই মেয়ে রেখে মারা যান। পরবাসী বালার দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। বর্তমানে পরবাসী বালার ছোট ছেলে আরসি লাল তাঁর পরিবার এবং মৃত বড় ভাইয়ের পরিবার নিয়ে কম্পরাম সিংহের বসতভিটায় বসবাস করছেন। রাজনৈতিক জীবন: কম্পরাম সিংহ ১৯৪০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে লাহিড়ীহাটে জমিদারদের স্বেচ্ছাচারমূলক তোলা আদায়ের বিরুদ্ধে কৃষকদের সংগঠিত করেন, যা রাজনৈতিক ইতিহাসে “তোলাবাটি ” আন্দোলন নামে খ্যাত হয়। এই আন্দোলনে নেতৃত্বদানের দায়ে তিনি গ্রেফতার হন এবং তিন মাস কারাবন্দী জীবন কাটান। ১৯৪৭ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক পার্টি সম্মেলনে প্রতিনিধিরূপে নির্বাচিত হন। তোলাবাটি আন্দোলন শেষ হতে না হতেই সমগ্র উত্তরবঙ্গে বর্গা চাষীদের তেভাগা আন্দোলন সংগঠিত হয় এবং কম্পরাম সিংহ সেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। তিনি বালিয়াডাঙ্গী, রাণীশংকৈল, আটোয়ারী থানায় তেভাগা আন্দোলনে নেতৃত্ব প্রদান করেন। এই সময় তার উপর সরকারি হুলিয়া থাকায় দুই বছর আত্মগোপন করেন। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর মুসলিম লীগ শাসনামলে ১৯৪৯- এ তিনি পুনরায় গ্রেফতার হন এবং অনার্য কৃষক নেতা কর্মীর সাথে রাজবন্দী হিসাবে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে খাপড়া ওয়ার্ডে অন্তরীণ হন। এই সময় রাজবন্দীদের উপর মুসলিম লীগ সরকারের অমানবিক অত্যাচার- উৎপীড়নের প্রতিবাদে এবং তাদের মানবেতর পরিবেশ থেকে মানবিক পরিবেশে উন্নীত করার দাবিতে রাজশাহী কারাগারে রাজবন্দীরা যে আন্দোলন করেন তিনি তাতে নেতৃত্ব প্রদান করেন। মৃত্যু: ১৯৫০ সালের ২৪ এপ্রিল রাজশাহী সেন্ট্রাল জেলে আটজন রাজবন্দীকে আটকে রাখা হয়। তাদেরকে আটকে রাখলে তীব্র বিক্ষোভে সামিল হন বাকি বন্দীরা। পরবর্তীতে রাজবন্দীদেরকে কুখ্যাত খাপড়া ওয়ার্ডে পাঠানো হয়। পাকিস্তান সরকার গুলি চালালে শহীদ হন শহীদ কমরেড কম্পরাম সিংহ। তাঁর সাথে শহীদ হন আরো ছয়জন। উপসংহার: অনেকেই হয়তো কমরেড কম্পরাম সিংহের কথা ভুলেই গেছে, কিন্তু তেভাগা আন্দোলনে তাঁর যে অবদান তা অনস্বীকার্য। তিনি বিনা খেসারতে জমিদারি প্রথা এবং চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের বিলুপ্তি ঘটান এবং কৃষকেরা তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরে পায়। মুক্তি পায় শত শত বছরের শোষণ, অবিচার আর অন্যায়ের হাত থেকে। উৎস: খাপড়া ওয়ার্ড হত্যাকাণ্ড ১৯৫০ উপজেলা প্রশাসন, বালিয়াডাঙ্গী, ঠাকুরগাঁও